HomeTicketChittagong to cox's bazar train ticket price​ (ট্রেনে চট্রগ্রাম টু কক্সবাজার)

Chittagong to cox’s bazar train ticket price​ (ট্রেনে চট্রগ্রাম টু কক্সবাজার)

Table of contents

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ভ্রমণকারীদের জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে চালু করেছে নতুন ট্রেন সেবা। সমুদ্র সৈকতের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতি বছর লাখ লাখ পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণ করেন। সড়কপথের তুলনায় ট্রেন ভ্রমণ আরামদায়ক, নিরাপদ এবং তুলনামূলক সাশ্রয়ী। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি কক্সবাজার। সমুদ্রের নীল জলরাশি, বালির নরম আঁচল, আর ঢেউয়ের অবিরাম গান—এই সবকিছুর মাঝেই যেন হারিয়ে যাওয়ার এক অপার্থিব অনুভূতি জাগে। এজন্য চট্রগ্রাম টু কক্সবাজার ট্রেনের টিকেটের মূল্য (Chittagong to cox’s bazar train ticket price) বিষয়ে ভ্রমন পিপাসুদের ব্যপক আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়।

এই যাত্রাকে আরও সুন্দর করে তোলে ট্রেনে চড়ে কক্সবাজার যাওয়ার অভিজ্ঞতা। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ট্রেনে যাত্রা শুধু একটি পরিবহন মাধ্যম নয়, এটি এক অনন্য অভিজ্ঞতা। আজ আমরা আলোচনা করব চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ট্রেনের টিকিট সংক্রান্ত সকল তথ্য নিয়ে। এই  আর্টিকেলে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ট্রেনের সময়সূচি, টিকিটের মূল্য, বুকিং পদ্ধতি, ট্রেনের সুবিধাসমূহ, এবং ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেওয়া হলো।

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ট্রেন সেবা

বর্তমানে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রুটে দুটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে:

  1. সৈকত এক্সপ্রেস (৮২১/৮২৪)
  2. প্রবাল এক্সপ্রেস (৮২২/৮২৩)

এ ছাড়াও ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা দুটি এক্সপ্রেস ট্রেন, কক্সবাজার এক্সপ্রেস (৮১৩/৮১৪) এবং পর্যটক এক্সপ্রেস (৮১৫/৮১৬) এর মাধ্যমেও আপনি কক্সবাজার ভ্রমণ করতে পারবেন।

এগুলো মিটারগেজ ট্রেন, যেগুলো আধুনিক কোচ ও উন্নতমানের সেবা দিয়ে পর্যটকদের আরামদায়ক ভ্রমণের সুযোগ দিচ্ছে।

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ট্রেনগুলোর সময়সূচী —

ট্রেনের নামপ্রস্থানের সময়পৌঁছানোর সময়বন্ধের দিন
কক্সবাজার এক্সপ্রেস (814)ভোর ৪:০০সকাল ৭:২০সোমবার
সৈকত এক্সপ্রেস (821)সকাল ৬:১৫সকাল ৯:৫৫সোমবার
পর্যটক এক্সপ্রেস (816)সকাল ১১:৪০দুপুর ৩:০০রবিবার
প্রবাল এক্সপ্রেস (823)দুপুর ৩:১০সন্ধ্যা ৭:০০সোমবার

কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম ফেরার সময়সূচিও একইভাবে নির্ধারিত রয়েছে।

টিকিটের মূল্য ও শ্রেণীবিভাগ

বাংলাদেশ রেলওয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে বিভিন্ন শ্রেণির আসনের ব্যবস্থা রেখেছে। আসনভেদে ভাড়ার পার্থক্য রয়েছে।

চট্রগ্রাম টু কক্সবাজার ট্রেনের টিকিটের দাম (Chittagong to cox’s bazar train ticket price) নির্ধারিত হয়েছে শ্রেণীভেদে। আপনার পছন্দ ও বাজেট অনুযায়ী যে কোনো একটি টিকিট বেছে নিতে পারেন।

শ্রেণী অনুযায়ী ট্রেনের সিট ভাড়া (টাকায়)
ট্রেনের নামF_SEATF_CHAIRS_CHAIRSHOVAN
সৈকত এক্সপ্রেস (৮২১/৮২৪)৩৪০৩৪০২২৫১৮৫
প্রবাল এক্সপ্রেস (৮২২/৮২৩)৩৪০৩৪০২২৫১৮৫
ট্রেনের নামF_SEATAC_SSNIGDHAS_CHAIR
কক্সবাজার এক্সপ্রেস (৮১৩/৮১৪)৫৬৫৪৭০২৫০
পর্যটক এক্সপ্রেস (৮১৫/৮১৬)৪৭০২৫০

অনলাইন থেকে টিকিট বুকিং দিলে উল্লেখিত ভাড়ার সাথে ২০ টাকা সার্ভিস চার্জ যুক্ত হবে এবং AC_B/F_BERTH এই শ্রেণীর টিকিটের সাথে ৫০ টাকা বেডিং চার্জ যুক্ত হবে।

এসব আসনের টিকিট নির্দিষ্ট সময়ে বুকিং করতে হয়, বিশেষ করে পর্যটন মৌসুমে আগেভাগে বুকিং না করলে টিকিট পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

কোথায় এবং কীভাবে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করবেন?

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ট্রেনের টিকিট তিনটি উপায়ে সংগ্রহ করা যায়:

১. অনলাইনে টিকিট বুকিং

Image of e-ticket of BD Goverment

বাংলাদেশ রেলওয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট (https://eticket.railway.gov.bd/) থেকে টিকিট কেনা যায়। এছাড়াও, “Rail Sheba” মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করেও অনলাইনে টিকিট কাটা সম্ভব।

প্রক্রিয়া:

  1. ওয়েবসাইট বা অ্যাপে অ্যাকাউন্ট খুলুন।
  2. চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রুট সিলেক্ট করুন।
  3. যাত্রার তারিখ এবং আসন শ্রেণী বেছে নিন।
  4. অনলাইনে পেমেন্ট করুন (বিকাশ, রকেট, নগদ বা কার্ড)।
  5. বুকিং কনফার্ম হলে এসএমএস বা ইমেইলে ই-টিকিট পাবেন।

২. স্টেশন কাউন্টার থেকে টিকিট সংগ্রহ

Image of World-Class Cox's Bazar railway station

চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের টিকিট কাউন্টার থেকেও টিকিট সংগ্রহ করা যায়।

প্রক্রিয়া:

  • জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদের তথ্য দিয়ে টিকিট সংগ্রহ করা হয়।
  • নগদ বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টিকিটের মূল্য পরিশোধ করা যায়।

৩. মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট কেনা

Rail Sheba” অ্যাপে লগইন করে সহজেই টিকিট বুকিং করা যায়।

ট্রেনের সুবিধাসমূহ

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ট্রেনগুলোতে যাত্রীদের জন্য আধুনিক সুবিধা রাখা হয়েছে:

  • আরামদায়ক আসন: এসি ও নন-এসি চেয়ারের ব্যবস্থা
  • খাবার ও পানি: ট্রেনের ক্যান্টিনে খাবারের ব্যবস্থা
  • টয়লেট: উন্নত ও পরিষ্কার টয়লেট
  • বিদ্যুৎ সংযোগ: মোবাইল চার্জিংয়ের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ
  • নিরাপত্তা ব্যবস্থা: পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি

ভ্রমণের সময় প্রয়োজনীয় কিছু টিপস

আগেভাগে টিকিট বুক করুন – বিশেষ করে শীতকাল এবং সরকারি ছুটির সময় টিকিটের চাহিদা বেশি থাকে।
পর্যাপ্ত সময় হাতে রাখুন – স্টেশনে নির্দিষ্ট সময়ের আগে পৌঁছান।
নিজের মালামালের প্রতি খেয়াল রাখুন – বিশেষ করে যাত্রাপথে মূল্যবান জিনিসপত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।
ট্রেনের খাবারের বিকল্প রাখুন – চাইলে নিজের খাবার সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেন।
পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখুন – প্রয়োজনে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ যাচাই করতে পারে।

কক্সবাজার ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা

কক্সবাজার শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের জন্য বিখ্যাত। ট্রেনে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পৌঁছানোর পর ট্যাক্সি, সিএনজি বা রেন্ট-এ-কার নিয়ে সরাসরি হোটেলে যাওয়া যায়।

কক্সবাজারে দর্শনীয় স্থানসমূহ

  1. সমুদ্র সৈকত: লাবনী, সুগন্ধা, ইনানী, হিমছড়ি
  2. মেরিন ড্রাইভ: কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত
  3. সাফারি পার্ক: ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক
  4. মাহেশখালী দ্বীপ: ঐতিহাসিক আদিনাথ মন্দির

কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম ফেরার সময়সূচি নিচে দেওয়া হলো—

ট্রেনের নামপ্রস্থানের সময়পৌঁছানোর সময়বন্ধের দিন
প্রবাল এক্সপ্রেস (822)সকাল ১০:৩৫দুপুর ২:২৫সোমবার
কক্সবাজার এক্সপ্রেস (813)দুপুর ১২:৩০দুপুর ৩:৪০মঙ্গলবার
পর্যটক এক্সপ্রেস (815)রাত ৮:০০রাত ১০:৫০বুধবার
সৈকত এক্সপ্রেস (824)রাত ৮:১৫রাত ১১:৫০সোমবার

চট্টগ্রাম টু কক্সবাজার ট্রেনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

বাংলাদেশ রেলওয়ে ভবিষ্যতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে নতুন ট্রেন চালুর পরিকল্পনা করছে। এছাড়াও, ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন সার্ভিস চালুর পরিকল্পনাও রয়েছে।

উপসংহার

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ট্রেনে ভ্রমণ সহজ, নিরাপদ এবং আরামদায়ক। অনলাইনে বা কাউন্টারে সহজেই টিকিট সংগ্রহ করা যায়। ট্রেনে ভ্রমণের মাধ্যমে ভাড়ার খরচ কমিয়ে কক্সবাজারের সৌন্দর্য উপভোগ করা সম্ভব। আশা করি, এই বিস্তারিত গাইড আপনাকে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ট্রেন ভ্রমণে সহায়তা করবে।

আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে, তাহলে কমেন্টে জানান! শুভ যাত্রা!

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ)

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ট্রেনে যেতে কত সময় লাগে?

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ট্রেনে যেতে গড়ে ৪-৫ ঘণ্টা সময় লাগে। নির্দিষ্ট ট্রেনের সময়সূচি ও স্টপেজের ওপর নির্ভর করে সময় কিছুটা কমবেশি হতে পারে।

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ট্রেনের ভাড়া (Chittagong to cox’s bazar train ticket price) কত?

ট্রেনের শ্রেণিভেদে ভাড়া আলাদা হয়। যেমন—

শোভন: ১৮৫ টাকা
শোভন চেয়ার: ২২৫ টাকা
এস চেয়ার: ৩৪০ টাকা
এস নিদ্রা (স্নিগ্ধা): ৪৭০-৫৬৫ টাকা

অনলাইন টিকিট কিনলে ২০ টাকা সার্ভিস চার্জ যুক্ত হবে এবং বার্থ নিলে ৫০ টাকা বেডিং চার্জ লাগবে।

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ট্রেনের টিকিট কিভাবে বুক করবো?

আপনি তিনভাবে টিকিট সংগ্রহ করতে পারেন:

১. অনলাইনে: বাংলাদেশ রেলওয়ে ই-টিকেটিং সিস্টেম বা “Rail Sheba” অ্যাপ থেকে।
২. স্টেশন কাউন্টার থেকে: চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন দেখিয়ে।
৩. মোবাইল অ্যাপ: “Rail Sheba” অ্যাপ থেকে লগইন করে সহজেই টিকিট বুক করা যায়।

কোন কোন ট্রেন চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যায়?

বর্তমানে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে দুটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে:

সৈকত এক্সপ্রেস (৮২১/৮২৪)
প্রবাল এক্সপ্রেস (৮২২/৮২৩)

এছাড়া, ঢাকা থেকে কক্সবাজারগামী ট্রেনও এই রুটে চলাচল করে:

কক্সবাজার এক্সপ্রেস (৮১৩/৮১৪)
পর্যটক এক্সপ্রেস (৮১৫/৮১৬)

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ট্রেনের সময়সূচি কী?

সৈকত এক্সপ্রেস (৮২১): সকাল ৬:১৫ → সকাল ৯:৫৫
প্রবাল এক্সপ্রেস (৮২৩): দুপুর ৩:১০ → সন্ধ্যা ৭:০০
কক্সবাজার এক্সপ্রেস (৮১৪): ভোর ৪:০০ → সকাল ৭:২০
পর্যটক এক্সপ্রেস (৮১৬): সকাল ১১:৪০ → দুপুর ৩:০০

ফেরার সময়ও একইভাবে নির্ধারিত রয়েছে।

ট্রেনে কি খাবার ও টয়লেটের ব্যবস্থা আছে?

হ্যাঁ, প্রতিটি ট্রেনে ক্যান্টিন থাকে যেখানে খাবার ও পানীয় পাওয়া যায়। পাশাপাশি উন্নত মানের টয়লেটের ব্যবস্থাও রয়েছে।

ট্রেনে কি মোবাইল চার্জিংয়ের ব্যবস্থা আছে?

হ্যাঁ, ট্রেনের এসি কোচ ও নির্দিষ্ট চেয়ার কোচে মোবাইল চার্জিং পয়েন্ট থাকে।

ট্রেনের টিকিট কি রিফান্ড করা যায়?

হ্যাঁ, নির্ধারিত সময়ের (২৪ ঘণ্টার) মধ্যে টিকিট বাতিল করলে কিছু সার্ভিস চার্জ কেটে টাকা ফেরত দেওয়া হয়। অনলাইন টিকিটের ক্ষেত্রে রিফান্ড নীতিমালা বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।

ট্রেনে ভ্রমণের জন্য কোন পরিচয়পত্র লাগবে?

হ্যাঁ, অনলাইনে বা স্টেশন থেকে টিকিট কাটার সময় জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট বা জন্মনিবন্ধনের তথ্য প্রদান করতে হয়।

ট্রেনে কি নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে?

হ্যাঁ, প্রতিটি ট্রেনে পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা থাকেন। যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়।

পর্যটন মৌসুমে কি টিকিট পাওয়া সহজ?

না, শীতকাল ও সরকারি ছুটির সময় চাহিদা বেশি থাকায় আগেভাগে টিকিট বুক করা ভালো।

কক্সবাজারে পৌঁছে কীভাবে হোটেলে যাবো?

কক্সবাজার রেলস্টেশন থেকে সরাসরি সিএনজি, ট্যাক্সি বা রেন্ট-এ-কার নিয়ে হোটেলে যাওয়া যায়, এমন কি পায়ে হাতা দূরত্ব তেও মানসম্মত হোটেল পাওয়া যায়।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular